পরিবারের ছোঁয়া মিলল নক্ষত্রের মাঝে।
২০২৫ সালের জুন মাস। ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (ISRO) তাদের প্রথম গভীর মহাকাশ মিশনের জন্য একজন দক্ষ ও সাহসী নভোচারী খুঁজছিল। সেই তালিকায় সবার শীর্ষে উঠে আসেন উত্তরপ্রদেশের ছোট শহরের এক তরুণ—শুভাংশু শুক্লা। সাহস, মেধা আর কঠোর পরিশ্রম তাঁকে নিয়ে গেল এক অন্য জগতে—মহাকাশে।
যাত্রাপথে শুভাংশু একটি অজানা গ্রহে অবতরণ করেন, যেখানে তিনি চমকে যান—কেননা সেই গ্রহে তিনি দেখতে পান এমন কিছু চেনা মুখ, যাঁদের তিনি পৃথিবীতে রেখেই এসেছিলেন: তাঁর মা, বাবা ও ছোট বোন!
কীভাবে সম্ভব? বিজ্ঞানী দল জানায়, এটি টাইম-ডাইমেনশন ফোল্ডিং এর ফল। একরকমের মহাজাগতিক বিকৃতি যার ফলে বিভিন্ন সময়ে থাকা ব্যক্তিরা একই সাথে এক মুহূর্তে উপস্থিত হতে পারেন। শুভাংশুর পরিবার ছিলেন তার অতীতের স্মৃতিতে বন্দী এক টাইম-জোনে।
তাঁর মায়ের চোখে জল, বাবার কণ্ঠে গর্ব আর বোনের হাসিতে ঝরে পড়ে এক স্বপ্নের বাস্তবতা। শুভাংশু কিছু মুহূর্ত কাটান তাঁদের সাথে—আলিঙ্গন, স্মৃতিচারণ, এবং প্রাণভরে বলা "ভালোবাসি তোমাদের"।
এই মিলন ছিল ক্ষণস্থায়ী। মহাকাশযানের সময় শেষ হচ্ছিল। বিদায়ের আগে মা তাঁর হাতে একটি রক্ষাকবচ পরিয়ে দেন। শুভাংশু বলেন, "এই মুহূর্তটাই আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ উপহার।"
পৃথিবীতে ফিরে এসে শুভাংশু জানান, "আমি শুধু একজন মহাকাশচারী নই, একজন পুত্র, ভাই এবং সন্তান। মহাকাশ আমাকে দূরে নিয়েছিল, কিন্তু পরিবার আমাকে ফিরিয়ে এনেছে।
পরিবারের সঙ্গে কাটানো ওই ছোট্ট মুহূর্তটুকুই যেন এক জীবনের সমান। কিন্তু সময় কাউকে অপেক্ষা করে না। তাঁর স্পেসক্র্যাফটের AI সিস্টেম যখন সাবধান করে দিল ‘মিশন উইন্ডো ক্লোজিং ইন 5 মিনিটস’, শুভাংশুর চোখ অশ্রুসজল হয়ে উঠল।
"আমার তো আরও অনেক কিছু বলা বাকি ছিল…" — মনে মনে বললেন তিনি। তবুও মা-বাবা তাঁকে বললেন, "তুমি যাও, তোমার কাজ আরও বড়। আমাদের ভালোবাসা সবসময় তোমার সঙ্গে থাকবে।"
স্পেসক্র্যাফটে উঠে শুভাংশু বারবার পিছন ফিরে তাকান। জানেন, সেই দৃশ্য হয়তো আর কোনোদিন দেখবেন না। মহাকাশযান গতি পায়, এবং ক্রমশ হারিয়ে যায় সে গ্রহের দৃশ্য।
মহাকাশে ভেসে থাকতে থাকতে শুভাংশু ভাবছিলেন— "আমি কত কিছু শিখেছি এখানে, কিন্তু সবচেয়ে বড় পাঠ? ভালবাসা – সেটাই সর্বশ্রেষ্ঠ শক্তি।"
পৃথিবীতে পৌঁছে সাংবাদিকরা ভিড় করেন তাঁকে ঘিরে। কেউ জিজ্ঞাসা করেন, “আপনি কি সত্যিই আপনার পরিবারকে দেখেছেন মহাকাশে?” তিনি মৃদু হেসে বলেন, “আপনারা যেটা অলৌকিক বলেন, আমি সেটা ‘ভালবাসার বিজ্ঞান’ বলি।”
তিনি জাতির উদ্দেশে একটি বার্তাও দেনঃ “আপনারা যদি স্বপ্ন দেখেন, তবে তাকে ভালোবাসা দিয়ে আঁকড়ে ধরুন। তাহলে সেই স্বপ্ন একদিন বাস্তব হবেই।”
ঘটনার কয়েক সপ্তাহ পর শুভাংশু ঘোষণা করেন, তিনি নিজের অভিজ্ঞতা নিয়ে একটি বই লিখবেন। বইটির নাম হবে: “মহাকাশে মা'র মুখ”।
এই বইয়ে থাকবে –
মহাকাশ প্রযুক্তির অজানা দিক,
একটি পরিবারকে হারিয়ে আবার ফিরে পাওয়ার গল্প,
আর থাকবে তাঁর হৃদয়ের গভীরতম কথা।
আজ শুভাংশু শুক্লা শুধু একজন মহাকাশচারী নন—তিনি ভালোবাসার দূত। তাঁর অভিজ্ঞতা আমাদের শেখায়, পৃথিবীর বাইরেও হৃদয়ের টান কাজ করে।
0 মন্তব্যসমূহ